যারা ভালভাবে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবে তাদের জন্য খুবই ভাল হয়েছে। তারা এখন আগের চাইতে বেশী বেশী অর্ডার পাবে। আর যারা কোন কাজ না শিখেই সরাসরি ফাইভারে একাউন্ট তৈরী করে এপ্লাই করতে থাকে তাদের রাস্তা বন্ধ হল। এটা আরো অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল।
বায়ার রিকোয়েষ্ট জিনিসটা আসলে কি? মনে করুন কোন বায়ার ফেসবুক মার্কেটিং এর কাজ করাবে। এখন ঐ বায়ার তার নিজের প্রোফাইলে একটা জব পোষ্ট করল যে “I need a Facebook Marketer for my Compay”. এখন ফাইভার তার এই পোষ্ট টা সেই সকল ফ্রিল্যান্সারের প্রোফাইলে পাঠাত যারা ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে - গিগ তৈরী করেছে বা গিগের মধ্যে ফেসবুক মার্কেটিং ট্যাগ দিয়েছে। পাশাপাশি যারা প্রোফাইল ডেসক্রিপশন বা প্রোফাইল স্কীলে যে কোন ভাবে ফেসবুক মার্কেটিং লিখেছে। তাদের সবার একাউন্টে বায়ারের ঐ পোষ্ট টা বায়ার রিকোয়েষ্ট হিসেবে চলে যাবে। আসলে কিন্তু বায়ার নিজে সবার কাছে পাঠাই নাই সে জাষ্ট তার প্রোফাইলে পোষ্ট করেছিল কিন্তু ফাইভার বায়ারের এই মেসেজটা বেশ কিছু ফেসবুক মার্কেটারের প্রোফাইলে পাঠিয়ে দিবে। তার মানে সরাসরি বায়ার আপনাকে চিনেও না আপনাকে কোন রিকোয়েষ্ট ও পাঠাই নাই। এটা হল জাষ্ট ফাইভারের রিকমেন্ডেশন।
এখন যারা এই রকম বায়ার রিকোয়েষ্ট পেত তারা খুব সহজেই বায়ারকে রিপ্লাই করতে পারত। রিপ্লাই পছন্দ হলে বায়ার ফাইভার ইনবক্সে মেসেজ পাঠাত, লিখে লিখে কিছু চ্যাট হত এবং বায়ার সন্তুষ্ট হলে সে হায়ার করত। এইভাবেই নতুন ফ্রিল্যান্সাররা সহজে কাজ পেত।
কিন্তু এটাতে একটা বড় সমস্যা ছিল সেটা হল- বায়াররা সহজে বুঝতে পারতনা কে এক্সপার্ট আর কে কাজ জানে না। অনেক সময় বায়ার ফ্রিল্যান্সার হায়ার করার পর বুঝতে পারে এটা মাকাল ফল। তখন বায়ারের সময়ও নষ্ট হয় টাকাও নষ্ট হয়। আর অন্যদিকে যারা খুব ভালভাবে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছে তারা অনেক সময় প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ পেত না।
এখন ফাইভার এবং বায়াররা চাই যারা ভালভাবে কাজ শিখেছে শুধুমাত্র তারারই যেন কাজ পায়। তাই তারা বায়ার রিকোয়েষ্ট সিষ্টেম বন্ধ করে দিয়েছে। খুবই ভাল একটা কাজ হয়েছে। এখন বায়াররা কাজ দিতে আসলে সরাসরি আপনার গিগ এবং প্রোফাইল খুব ভালভাবে চেক করবে এবং বুঝার চেষ্টা করবে আপনি কি আসলে কাজ শিখে এসেছেন নাকি না শিখেই এপ্লাই করেছেন? যখন সে নিশ্চিত হবে যে আপনি খুব ভালভাবে কাজ শিখেছেন তখনই সে আপনাকে সরাসরি ফাইভার ইনবক্সে মেসেজ দিবে, আপনার সাথে চ্যাট করবে এবং হায়ার করবে।
এটাতে যারা কাজ জানে তারা আগের চাইতে অনেক বেশী বেশী কাজ পাবে আর যার কাজ জানে না তারা কাজ পাবে না। এখন আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে আপনাকে অনেক ভালভাবে প্রফেশনাল লেভেলে কাজ শিখতে হবে। কাজ শিখার পর আপনি যে আসলেই কাজ পারেন এটা বায়ারকে কিভাবে বুঝাবেন?
১. খুব ভালমানের কিছু স্যাম্পল তৈরী করে গিগের গ্যলারীতে রাখতে হবে।
২. খুব ভাল মানের এবং প্রফেশনাল লেভেলের গিগ তৈরী করতে হবে। প্রোফাইল ব্যানার, ডেসক্রিপশন, ট্যাগ, প্যাকেজ ইত্যাদি প্রত্যেকটি খুব ভালভাবে করতে হবে।
৩. প্রোফাইলটা খুব সুন্দর করে সাজাতে হবে। টাইটেল, প্রোফাইল ডেসক্রিপশন এবং স্কীলগুলো অনেক সময় নিয়ে খুব সুন্দরভাবে এবং নির্ভুলভাবে লিখতে হবে।
৪. বায়ার যখন আপনার সাথে চ্যাট করবে তখন তাকে আপনার কাজের কোয়ালিটি বুঝিয়ে এবং কোয়ালিটি স্যাম্পল দেয়ে ইমপ্রেস করতে হবে।
৫. ফ্রিল্যান্সিং এ মাত্র ২০% কাজ আসে ফাইভারের মত মার্কেটপ্লেস থেকে আর ৮০% ক্ষেত্রে বায়াররা সরাসরি সোস্যাল মিডিয়া থেকে হায়ার করে যেমন : ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রম, পিন্টারেষ্ট এবং লিংকডইন। লিংকডইন কে বলা হয় বায়ারের খনি। এখান থেকে অনেক বড় বড় বায়ার এবং ভাল বেতনে স্থায়ী চাকরী পাওয়া যায়। সুতরাং আপনি সোস্যাল মিডিয়াতে আপনার সার্ভিসটি শেয়ার করবেন। অনেক বায়ার আপনার সাথে চ্যাট করবে এবং সে যদি আপনাকে হায়ার করতে চায় তখন জাষ্ট তাকে আপনার ফাইভারের প্রোফাইল লিংকটি দিবেন। সেই বায়ার সাথে সাথে আপনার ফাইভারে এসে আপনাকে হায়ার করতে পারবে। আপনি চাইলে বায়ারকে ফাইভারে না এনে সরাসরি তার সাথে কাজ করতে পারেন এবং ব্যাংকে পেমেন্ট নিতে পারেন। কিন্তু নতুন অবস্থায় ফাইভারে আনলেই ভাল হবে কাজ ফাইভার থেকে আপনি পেমেন্টের নিশ্চয়তা পাবেন।
উপসংহারে এটাই বলব এই রকম আরো অনেক অনেক চেইঞ্জ আসবে। কিন্তু আপনি যদি সিরিয়াসলি কাজ শিখেন তবে এই রকম প্রত্যেকটি পরিবর্তন আপনাকে লাভবান করবে।
ধন্যবাদ
লেখক: মো: জামাল উদ্দিন
ফাউন্ডার,
আউটসোর্সিং ইন্সটিটিউট।