আমার এই কথা শুনে কিছু মানুষ হাসবে কারণ তাদের মতে সরকারী চাকরীর সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর তুলনাই হতে পারে না। কোথায় কি!
যাহোক যারা এইভাবে চিন্তা করছেন তারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কতটুকু জানেন? খুব বেশী না। জাষ্ট এতটুকু ধারণা আছে যে ফ্রিল্যান্সিং করে ডাটা টাইপ করে টুকটাক কিছু ইনকাম করা যায়। এর বেশী কিছু তারা জানেন না। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা হাসবে।
যাহোক তারা হাসতে থাকুক। তবে যারা ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সম্পর্কে ভালভাবে জানেন শুধুমাত্র তারাই নিচের তুলনাগুলো পড়ুন :
১. সরকারী চাকরী পেতে কয়েক বছর প্রিপারেশন নিতে হয়। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং ইনকাম শুরু করতে মাত্র কয়েক মাসের পড়াশুনাই যথেষ্ঠ।
২. সরকারী চাকরী পেতে মামা-চাচা ধরতে হয় কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে এগুলোর কিছুই লাগে না।
৩. সরকারী চাকরী পাওয়ার সম্ভাবনা ১ % এর ও কম। কারণ একটা পদের বিপরীতে কয়েকশত জন এপ্লাই করে। কিন্তু আপনি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে ফ্রিল্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১০০%।
৩. চাকরী পাওয়ার পর বেতন হয় আনুমানিক ৩০/৪০ হাজার। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করে ৬ মাস পর থেকেই নিশ্চিতভাবে ৫০ হাজার টাকার বেশী ইনকাম করা যায়।
৪. দুই বছর পর সরকারী চাকরীজীবীর বেতন হয় আনুমানিক ৫০ হাজার আর ফ্রিল্যান্সারের আয় হতে থাকে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকার বেশী। আর এই ইনকাম ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকে।
৫. একজন সরকারী চাকরীজীবী সারা জীবন যা আয় করে একজন ফ্রিল্যান্সার মাত্র কয়েক বছরেই তা করতে পারে।
৬. সরকারী চাকরী চলে যাওয়ার ভয় থাকে কিন্তু ফ্রিল্যান্সার এর চাকরী যাওয়ার কোন ভয় নাই। কারণ আজকে একটি চাকরী ছাড়লে আজকেই আরো ৩টি চাকরি ম্যানেজ করতে পারবে।
৭. একজন ফ্রিল্যান্সার আরো দশ জনকে চাকরী দিতে পারে কিন্তু সরকারী চাকরীজীবীরা সেটা পারে না। ফ্রিল্যান্সাররা দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রাখতে পারছে।
৮. ফ্রিল্যান্সাররা দেশর বাইরে থেকে ফরেন কারেন্সি এনে দেশের রিজার্ভ সমৃদ্ধ করছে যেট দিয়ে সরকার দেশের জন্য খাদ্য কিনতে পারে। কিন্তু একজন চাকরীজীবী যতই বেতন পাক না কেন তাতে বাইরে থেকে এক পয়সাও আসছে না।
পরিশেষে এটাই বলব আপনার যদি আন্তরিকভাবে দেশের সেবা করতে চান তাহলে অবশ্যই সরকারী চাকরী ভাল। আর যদি খুব দ্রুত নিজের ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হাজার গুণে বেটার। দু:খের বিষয় হল একটা ছেলে পড়াশুনা শেষ করার পর কমপক্ষে ২ বছর সরকারী চাকরীর পেছনে দৌড়ায়, চাকরীর জন্য প্রচুর পড়াশুনা করে। তারপর ১০০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন চাকরী পায় আর ৯৯ জন সারা জীবনের জন্য ডিপ্রেশনে চলে যায়। এটা অমানবিক।
কিন্তু মজার বিষয় হল যে দুই বছর সে সরকরী চাকরী খুঁজবে তার থেকে মাত্র ৬ মাস যদি সে ফ্রিল্যান্সিং এর স্কীল বিল্ড করত তাহলে সে সরকারী চাকরীর দশগুণ ইনকাম করতে পারত।
ধন্যবাদ
লেখক : মো: জামাল উদ্দিন
ফাউন্ডার
আউটসোসিং ইন্সটিটিউট